আপনার টিভি আপনি নিয়মিত মেইনটেইন করলে আপনি টিভি রিপেয়ার কিংবা টিভির পার্টস রিপ্লেসমেন্ট এর ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন | শুধু তাই নয় , নিয়মিত মেইনটেন্যান্স আপনার ফ্লাট স্ক্রিন ভালো থাকে এবং আপনি দীর্ঘদিন এই ফ্লাট স্ক্রিন খুব ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারবেন | কখনো খুব ছোট ছোট বিষয় আমাদের টিভির যান্ত্রিক গোলযোগের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায় , যেমন ঘুমাতে যাবার আগে টিভি অফ না করে ঘুমানো , পাওয়ার সাপ্লাই ভোল্টেজ না চেক করা যার কারণে ইন্টারনাল সার্কিট সমস্যা হয় , ইলেকট্রিক যন্ত্র সামগ্রীর সবচেয়ে বড় হুমকি হচ্ছে ধুলা , এই ধুলার কারণে শর্ট সার্কিট সহ স্ক্রিন এর স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে যা সহজে রিপেয়ার করা সম্ভব নয় | তাই টিভির মেইনটেন্যান্স সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি |
১) রেগুলার টিভি অফ করা:
টেলিভশন সেট এর লাইফ সাইকেল এর দৈর্ঘ ৬৫০০ ঘন্টা | তথাপি টিভি দেখার সময় অন্য কিছু করা যেমন ঘুমানো কিংবা টিভি চালিয়ে অন্য কোথাও চলে যাওয়া একটা সময় অভ্যাস হয়ে যেতে পারে যার কারণে আপনি টিভি বন্ধ করার বিষয়ে অমনোযোগী হয়ে যাবেন | এবং টিভির জীবনকালের দৈর্ঘ্য কমে যেতে থাকবে এবং ২ বছর এর মধ্যে আপনার টিভি রিপেয়ার এর দরকার হয়ে যাবে | আপনি এই সমস্যা খুব সহজে এড়াতে পারেন শুধুমাত্র নিয়মিত আপনার যখন টিভি দরকার হয় না তখন এটি বন্ধ করে দিয়ে |
২) ভোল্টেজ রেগুলেটর এর ব্যবহার
ভোল্টেজ আপ ডাউন একটি বড় সমস্যা , অনেক সময় এই সমস্যার কারণে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে | এই আপ ডাউন কখন হয় ? যখন ইলেট্রিসিটি চলে যায় এবং আসে তখন এই ভোল্টেজ আপ ডাউন হয় , এছাড়া যখন একনাগাড়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ চলে এবং এই সময় যদি বজ্রপাত অথবা ঝড় হয় তখন এই ভোল্টেজ আপ ডাউন হতে পারে | একটি ভোল্টেজ রেগুলেটর আপনাকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে | তাই ভোল্টেজ রেগুলেটর শুধু আপনার টিভি নয় আপনার অন্যান্য ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতিকেও এই ভোল্টেজ উপদোন সংক্রান্ত ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে পারে |
৩) অপ্টিমাল ব্রাইটনেস :
অতিরিক্ত ব্রাইটনেস আপনার টিভির লাইফস্প্যান কমিয়ে দিতে পারে | আপনার ফ্লাট স্ক্রিন যদি আপনি দীর্ঘদিন আপনি ব্যবহার করতে চান তাহলে অবশ্যই টিভির ব্রাইটনেস আপনাকে কমিয়ে রাখতে হবে | শুধু যে টিভির ক্ষতি তা নয় , অতিরিক্ত ব্রাইটনেস আপনার চোখের ক্ষতিও করে | তাই টিভির ব্রাইটনেস সবসময় সুবিধাজনক অবস্থায় রাখা উচিত |
৪) কনট্রাস্ট এর সঠিক ব্যবহার :
হাই কনট্রাস্ট লেভেল এর ব্যাবহারে আপনার টিভির স্ক্রিন এর ক্ষতি হয় | হাই কনট্রাস্ট এর কারণে যখন বেশি প্রসেসিং পাওয়ার ব্যবহার হয় তখন পিকচার কোয়ালিটি কিছু দিনের মধ্যে খারাপ হয়ে আসে এবং এটা ঘটবেই | তাই কনট্রাস্ট লেভেল সবসময় কমিয়ে রাখা উচিত |
৫) টিভির মাঝে মাঝে খোলা বাতাস প্রয়োজন :
টিভির স্ক্রিন এর ভেন্টিলেশন এর জন্য একটি ভালো জায়গা প্রয়োজন | সাধারণত টিভির স্ক্রিন ইলেক্ট্রিসিটি ব্যবহারের কারণে অনেক গরম হয়ে যায় | এজন্য সবসময় যা করণীয় তা হচ্ছে টিভিকে এমন একটি জায়গায় সেট করা যেখানে ভেন্টিলেশন এর জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকে যাতে করে টিভি অফ করে দিলে এটি নিজে থেকে ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে এবং এর ভিতরের যন্ত্রাংশ যেন টিভি চলাকালীন সময়ে অতিরিক্ত গরম না হয় |
৬) ধারালো বা তীক্ষ্ণ বস্তু টিভি থেকে দূরে রাখা :
ধারালো বা তীক্ষ্ণ বস্তু খুব সহজে টিভি স্ক্রিন এর স্থায়ী ক্ষতিসাধন করতে পারে | যেহেতু বর্তমানকালে টিভি স্ক্রিনগুলো অংকে পাতলা তাই এ বেপারে সচেতন থাকে জরুরি | তাই ধারালো বা তীক্ষ্ণ যেসব বস্তু আছে তা টিভি স্ক্রিন থেকে দূরে রাখতে হবে |
৭) নিয়মিত টিভি পরিষ্কার করা :
আপনার ব্যাবহারিত টিভিটি আপনাকে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে | টিভি যদি নিয়মিত পরিষ্কার না করা হয় তাহলে টিভিতে যে ময়লা থাকলে বিশেষ করে স্ক্রিনে তা আপনার টিভি দেখায় যে আনন্দ তাতে বেঘাত ঘটাতে পারে | তাই এ বেপারে সতর্ক থাকা উচিত | কখন টিভি পরিষ্কারের কাজে পানি ব্যবহার করা উচিত নয় | এ ক্ষেত্রে আন্টি স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি ইকুইপমেন্ট ক্লিনার আপনি ব্যবহার করতে পারেন
৮)বার্ন ইন প্রিভেনশন :
বার্ন ইন এর মানে হচ্ছে টিভি স্ক্রিন ডিসকালার হয়ে যাওয়া | এই বার্ন ইন এড়াতে যারা টিভি দেখেন তারা টিভিতে দীর্ঘসময় স্থির চিত্র দেখা থেকে বিরত থাকতে পারেন |
৯) কম তাপমাত্রা এড়ানো :
আপনার টিভিটি যদি কম তাপমাত্রাযুক্ত স্থানে সেট করা হয় তাহলে আপনার টিভি সেটের স্ক্রিন এ বাষ্প জমে পানি দেখা যেতে পারে যা আপনার টিভির স্ক্রিন এ ক্ষতি করতে পারে | তাই টিভি সর্বদা যেখানে কক্ষ তাপমাত্রা আদর্শ অর্থাৎ কমও না এবং বেশিও না সেখানে সেট করা উচিত |